ইচ্ছেপাঠঃ উল্কা আসলে কী ? অনেকে একে তারা খসা বলে জানে। কিন্ত এক একটি তারা আকারে আয়তনে এত বড় হয় যে তাদের পৃথিবীর উপর খসে পড়া সম্ভব নয়। গোটা পৃথিবীটারই তারার ভেতর ঢুকে যাওয়ার কথা। বিজ্ঞানীদের মতে, মহাকাশে নানা ধরণের ছোটো ছোটো বস্তু যখন পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে, তখন প্রবল আকর্ষণে পৃথিবীর বুকে ঢুকে পড়ে চলে আসে। বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসা অধিকাংশ উল্কাপিণ্ডের উৎসই হল ধূমকেতু। পৃথিবী তার কক্ষপথে চলার সময়, বিভিন্ন ধূমকেতুর কক্ষপথের ভিতরে ঢুকে পড়ে। তখন ওই সব ধূমকেতুর টুকরো টুকরো পাথুরে অংশ পৃথিবীর তীব্র মাধ্যাকর্ষণের টানে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে। আর এই বস্তুগুলো যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তখন বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে প্রবল সংঘর্ষে সেগুলো উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং একসময় তাতে আগুন ধরে যায়। রাতের আকাশে মাটির দিকে ছুটে আসা ওই জ্বলন্ত বস্তুগুলোকেই উল্কা নামে আমরা জানি।
পৃথিবীতে উল্কাপাত যে কোনো সময়ই হতে পারে। তবে উল্কাপাতেরও কিছু নির্দিষ্ট সময় আছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে উল্কাবৃষ্টি যে নক্ষত্রমণ্ডল বরাবর হয়, তার নামেই উল্কাপাতের নামকরণ করা হয়।
বিজ্ঞানীদের হিসেব বলছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৫ কিমি থেকে ১১৫ কিমি এর মধ্যে যে সব উল্কা জ্বলতে জ্বলতে নিচে নেমে আসে, সেই উল্কাগুলোই আমরা দেখতে পাই। বেশীরভাগ উল্কাই আকাশেই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা একটা হিসেব কষে দেখেছেন যে প্রতি বছর প্রায় ১৫০০ মেট্রিক টন উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে।