About Us | Contact Us |

যাত্রী নয়, জঞ্জাল নিয়ে ছুটত ধাপা মেল, এই কলকাতার রাস্তাতেই

লিখেছেন : ইচ্ছেপাঠ
যাত্রী নয়, জঞ্জাল নিয়ে ছুটত ধাপা মেল, এই কলকাতার রাস্তাতেই

ইচ্ছেপাঠঃ আদি কলকাতার একেবারে উত্তর এবং পূর্ব প্রান্তে মারাঠা দস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করতে খোড়া হয়েছিল খাল। সে খাল পরিচিত মারাঠা ডিচ নামে। সেটা ১৭৪২ খৃষ্টাব্দের কথা। এরপর পলাশীর যুদ্ধ, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্ষমতা দখল। কলকাতা, সুতানটি, গোবিন্দপুরের সঙ্গে ততদিনে জুড়ে গেছে অনেকগুলি গ্রাম। গড়ে উঠছে শহর কলকাতা। আর শহর তৈরি হলে যা হয়। জঞ্জাল তৈরি হতে লাগল, আর তা জমাও হতে লাগল এখানে ওখানে। ফলে গোটা শহর নোংরা আবর্জনায় ভরে উঠল যেমন, আবার নোংরা জমা হওয়ায় প্রচুর মশা, মাছির উপদ্রবও তৈরি হল। সে সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শহর নিয়মিত পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়। তার আগে পর্যন্ত শহর নিয়মিত পরিষ্কার করার কোন উদ্যোগ ছিল না। শহরের পথঘাট থেকে আবর্জনা তো তোলা হল, কিন্তু সে আবর্জনা ফেলা হবে কোথায়? তখন সিদ্ধান্ত হয় শহরের পূর্ব প্রান্তের খাল অর্থাৎ মারাঠা ডিচেই যাবতীয় জঞ্জাল ফেলা হবে। সিদ্ধান্ত মতো খালে আবর্জনা ফেলতে ফেলতে ১৭৯৯ সাল নাগাদ দেখা গেল খাল ভরাট হয়ে গেছে আবর্জনায়তখন সেখানেই মাটি ফেলে খালের উপরেই তৈরি হয় আস্ত একটি রাস্তা-সার্কুলার রোড। আর সেই নতুন রাস্তা অর্থাৎ সার্কুলার রোডের উপরেই পাতা হয় রেললাইন। সে পথ দিয়ে ছুটত ট্রেন। না, যাত্রী বা পণ্য নিয়ে নয়। শুধুমাত্র জঞ্জাল ফেলার ট্রেনই ছুটত সে পথে। হ্যাঁ, এই কলকাতা শহরে একসময় নির্দিষ্ট সময়ে আসত জঞ্জাল রেল। শহরের নাগরিকরা সে ট্রেনে ফেলে দিত নোংরা আবর্জনা। এইভাবে শহরের সব আবর্জনা কুড়িয়ে জঞ্জাল রেল চলে যেত শিয়ালদায়। সেখান থেকে গাড়িতে করে ময়লা ফেলে দিয়ে আসা হত ধাপায়। জঞ্জাল ফেলার জন্যে রেললাইন এবং আলাদা ট্রেন বোধহয় বিশ্বের আর কোন শহর দেখে নি। শহরের মানুষ সে ট্রেনের নামকরণ করেছিলেন ধাপা মেল।