ইচ্ছেপাঠঃ বিজ্ঞানীরা বলেন যে আমাদের পৃথিবীটা বাতাসের এক পুরু আস্তরণ বা চাদর দিয়ে ঘেরা। একেই আমরা বায়ুমণ্ডল বলি। নাইট্রাজেন, অক্সিজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ধূলিকণা, জলীয়বাষ্প এবং আরও অনেক গ্যাস নিয়ে বায়ুমণ্ডল গঠিত। পৃথিবীর চারদিকই বায়ুমণ্ডল দ্বারা ঘেরা। বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন গ্যাসের মিশ্রণ হলেও এর বেশিরভাগ নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন।
সূর্য থেকে যে আলো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায় তাকে এই বায়ুমণ্ডল ভেদ করেই আসতে হয়। সূর্যের আলোর রঙ সাদা।আরও নির্দিষ্ট করে বললে সাদা আলো সাতটি মূল রং এর মিশ্রণ, যেমনটা আমরা রামধনুতে দেখে থাকি। এই রংগুলো হল – বেগুনি (Violet), অতি নীল (Indigo), নীল (Blue), সবুজ (Green), হলদে (Yellow), কমলা (Orange), ও লাল (Red)। এই রঙগুলোর প্রত্যেকটার একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্য আছে। তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিবর্তিত হলে আলোর রঙ পরিবর্তিত হয়ে যায়।যেমন সাদা আলোর মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বড়, অন্যদিকে নীল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য খুব ছোট।
সূর্য থেকে আসা আলো যখন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে তখন সেই আলো বায়ুমণ্ডলস্থ ধূলিকণা, জলকণা ও বায়ুকণার উপর পড়ে। ঐ সব পদার্থর অণুগুলি তখন সূর্যের আলোকে চতুর্দিকে বিক্ষিপ্ত করে দেয়। সূর্যের আলোর সঙ্গে যখন বায়ুর অনুগুলোর সংঘর্ষ হয় তখন বেগুনি, অতি নীল ও নীল বর্ণের আলো সব থেকে বেশি বিক্ষিপ্ত হয়। নীলের মতো খাটো তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলি বায়ুমণ্ডলের গ্যাসের অণুগুলির সঙ্গে অধিক সংঘর্ষ ঘটে,ফলে এর বিক্ষেপণ বেশি হয়। এতে করে নীল আলো বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। আর লাল এবং হলুদ রঙের মতো দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলি গ্যাসের অণুগুলির সঙ্গে সংঘর্ষ কম হয়,অর্থাৎ এদের বিক্ষেপণ কম হয়। তাই যখন আকাশের দিকে তাকাই তখন ঐ বেগুনি, অতি নীল ও নীল বর্ণগুলোই প্রধানতঃ আমাদের চোখে এসে পড়ে। আর এই কারণেই আকাশ আমাদের কাছে নীল বলে মনে হয়।