ইচ্ছেপাঠঃ যাতায়াতের প্রয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তৈরি হয়েছে লম্বা লম্বা সেতু। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে দীর্ঘ এই সেতু বা ব্রিজগুলো একেবারে সরলরেখার মতো সোজা না গিয়ে সামান্য বাঁকা। প্রশ্ন হল, সেতুগুলো অনুভূমিকভাবে বাঁকা থাকে কেন? দেখতে সুন্দর লাগবে বলে? না কি এধরনের নকশার পিছনে কোনো বৈজ্ঞানিক কারণ আছে?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ইচ্ছে করে বাঁকা করেই সেতুর নকশা করা হয়। এর প্রধান কারণ দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো। কারণ লম্বা পথ যদি সরলরেখার মতো সোজা হয়, তাহলে গাড়ির চালকেরা অনেক সময় অমনোযোগী হয়ে পড়েন। সেতু সোজা হলে বেশি দৈর্ঘ্যের কারণে গাড়ি চালানোর সময় চালকের ঝিমুনি আসতে পারে। অনেক চালক স্টিয়ারিং ছেড়েও গাড়ি চালাতে পারেন। কিন্তু সেতুতে বাঁক থাকলে চালকেরা গাড়ি চালানোর সময় অতিরিক্ত সতর্কতা বজায় রাখবেন। ফলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা অনেক কমে যাবে।
সদ্য চালু হয়েছে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার হলেও এর সেতু লম্বায় ১৪ কিলোমিটার। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে বাংলাদেশের দীর্ঘতম এই পদ্মা সেতু।সেতুটি সোজাও হতে পারত। কিন্তু ইচ্ছে করে বাঁকা করেই সেতুর নকশা করা হয়েছে। এর প্রধান কারণ দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে এ রকম বহু সেতু রয়েছে। আমেরিকা, চিন, জাপানেও অনেক সেতু এইভাবে বেঁকিয়ে করা হয়েছে। কারণ গাড়ি চলার সময় কম্পন হয়। তার ফলে চাপ পড়ে সেতুতে। কিন্তু সেতুটি যদি বাঁকিয়ে করা হয় তাহলে এই চাপ ছড়িয়ে পড়ে।এই ছাড়াও আরেকটি কারণ আছে। বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ির হেডলাইট সরাসরি চালকের চোখে পড়বে না। তাতেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমে যাবে।